আজ থেকে প্রায় সোয়া’শ বছর আগের কথা। ব্রিটিশ শাসিত ভারতের তৎকালীন পূর্ববঙ্গ বর্তমান বাংলাদেশের গাজীপুর জেলার ভাওয়াল পরগনার রাজা পূর্ববঙ্গের প্রথম বিদ্যুৎ ব্যবহারকারী হিসেবে পরিচতি। ঊনবিংশ শতাব্দীতেই তিনি সর্বপ্রথম বিলাত থেকে আমদানী করা জেনারেটরের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে রাজবাড়ী আলোকিত করেন। আধুনিকতার ছোঁয়া থেকে যোজন যোজন দূরত্বে থাকা ভাওয়ালবাসীর কাছে রাজকীয় ও সৌখিন এ প্রয়াস শুধুমাত্র বিস্ময়বোধের উদ্রেকই করেনি, এর সার্বজনীন ব্যবহারের গুরুত্ব বোধকেও জাগ্রত করে তোলে।
এরপর ১৯০১ সালে ঢাকার নবাব আহসানউল্লাহর বাসভবনে একটি জেনারেটর স্থাপন করা হয়। ১৯০১ সালের ৭ ডিসেম্বর মি. বোল্টন নামে জনৈক ব্রিটিশ নাগরিক আহসান মঞ্জিলে সুইচ টিপে প্রথম বিদ্যুৎ সরবরাহের সূচনা করেন। নবাব আহসানউল্লাহর অর্থানুকূল্যে অক্টাভিয়াস স্টিল নামক কোম্পানি তৎকালীন ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সড়ক ও আহসান মঞ্জিলসহ পর্যায়ক্রমে ঢাকার কয়েকটি অভিজাত ভবনকে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থার আওতায় এনেছিল। এই কোম্পানির বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা অনেক কম থাকায় তাদের বিদ্যুৎ সরবরাহ শুধু অভিজাত এলাকাতেই সীমাবদ্ধ ছিল।
১৯১৯ সালে ‘ডেভকো’ নামক ব্রিটিশ কোম্পানির মাধ্যমে ঢাকায় সীমিত আকারে বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার প্রথম বাণিজ্যিক বিকাশ শুরু হয়। পরবর্তীতে ১৯৩৩ সালে ওই কোম্পানি ঢাকার পরীবাগে প্রায় ৬ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ‘ধানমণ্ডি পাওয়ার হাউজ’ নির্মাণ করে বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ বিতরণ শুরু করে। ঢাকার বিভিন্ন এলাকার অভিজাত বাসিন্দারা ছিল এই বিদ্যুতের গ্রাহক, যা তাদের আভিজাত্যের মুকুটে সংযুক্ত করেছিল আরেকটি নতুন পালক।